জেবি টিভি রিপোর্ট: মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং তাদের ‘ডিপ স্টেট’-এর কিছু শক্তি বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে মিলে ভারতকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। আর এখানে ‘টার্গেট’ দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। হঠাৎ এমন অভিযোগ তুললো বিজেপি।
গত দুই দশকে নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটনের মধ্যে দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। তবে নানা মতপার্থক্য ও বিরক্তি সত্ত্বেও উভয়েই সম্পর্ক আরও জোরদার করার অঙ্গীকার করেছে। এমন সময় বিস্ফোরক এ অভিযোগ তুললো বিজেপি।
সম্প্রতি আদানি শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে বিজেপি সরকারের দুর্নীতি সংশ্লিষ্ট নানা ঘনিষ্ঠতা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট (ওসিসিআরপি)। বিজেপি বলছে, মোদিকে দুর্বল করার জন্য আদানি গ্রুপ এবং সরকারের সঙ্গে কথিত ঘনিষ্ঠতার উপর এককভাবে নিবদ্ধ করা হয়েছে।
সরকারি কর্মকর্তাদের কয়েক মিলিয়ন ডলার ঘুষ দেওয়া ও বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার তথ্য গোপনের ঘটনায় অভিযুক্ত গৌতম আদানির বিরুদ্ধে কিছুদিন আগে সমন জারি করেছে মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন। এর আগে সম্প্রতি গৌতম ও তার ভাতিজা সাগরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
ওসিসিআরপি’র নিবন্ধে ভারতের রাষ্ট্রীয় মদদপুষ্ট হ্যাকারদের বিরুদ্ধে সরকারের সমালোচকদের টার্গেট করতে ইসরায়েলের তৈরি পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করার অভিযোগও আনা হয়েছে।
এসব বিষয় নিয়ে তোলপাড় চলছে ভারতের রাজনীতিতে। সম্প্রতি আদানির দুর্নীতিকাণ্ড নিয়ে দেশটির সংসদেও ব্যাপক হট্টগোল চলে কয়েক দিন। যদিও মোদির সরকার দুটি অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে করা ধারাবাহিক পোস্টে বিজেপি বলেছে, মোদিকে টার্গেট করে ভারতকে অস্থিতিশীল করাই ডিপ স্টেটের স্পষ্ট উদ্দেশ্য। এই এজেন্ডার পেছনে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। এই এজেন্ডা পূরণে ওসিসিআরপি মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার সাংবাদিকদের পেশাগত উন্নয়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা দিয়ে থাকে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের সম্পাদকীয় সিদ্ধান্ত বা নির্দেশনাকে প্রভাবিত করে না। ভারতের ক্ষমতাসীন দল এ ধরনের অভিযোগ করবে, এটা হতাশাজনক।
বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র তথা সাংসদ সম্বিত পাত্র সম্প্রতি দলের আনুষ্ঠানিক সাংবাদিক সম্মেলনেও যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে তাদের অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করেন। তিনি বলেন, ফ্রান্সের একটি অনুসন্ধানী গণমাধ্যম গোষ্ঠী জানিয়েছে, ওসিসিআরপির ৫০ শতাংশ অর্থায়ন সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে আসে।
এদিকে, স্টেট ডিপার্টমেন্টের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন দলের অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য করার রয়টার্সের অনুরোধে সাড়া দেয়নি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ওসিসিআরপি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা একটি স্বাধীন গণমাধ্যম। এটি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়।
তারা বলছে, মার্কিন সরকার ওসিসিআরপিকে কিছু তহবিল সরবরাহ করলেও আমাদের সম্পাদকীয় প্রক্রিয়ায় কোনো হস্তক্ষেপ নেই এবং আমাদের প্রতিবেদনের উপর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।