জেবি টিভি: প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেয়ার এক সপ্তাহের মাঝেই সাত হাজারের বেশি অবৈধ অভিবাসীকে বিতাড়ন করা হয়েছে। এমন তথ্য দিয়েছে ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি। ইউএস ইমিগ্রেশন এন্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট’স এই বিষয়ে প্রতিদিন এক্স বার্তায় তথ্য দিচ্ছে।
গত দুই দশকে কোন প্রশাসনই দেশ থেকে পাঁচশো হাজার শরণার্থী বিতাড়ন করেনি। ২০১২ সালে ওবামা আমলে সর্বোচ্চ চারশো নয় হাজার নথিপত্রবিহীন অভিবাসীকে তাড়ানো হয়। ২০১৯ সালে অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২৬৭ হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশীকে দেশ থেকে বের করে দেয়া হয়। কিন্তু এবার ক্ষমতা নিয়েই প্রথম বছরে অন্তত মিলিয়ন শরণার্থীকে তাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন ট্রাম্প।
সেই লক্ষ্যে দায়িত্ব নেয়ার এক সপ্তাহের মাঝেই সাত হাজারের বেশি অবৈধ অভিবাসীকে বিতাড়ন করা হয়েছে। এমন তথ্য দিয়েছে ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি।
দেশের অন্যতম বড় শহর নিউ ইয়র্কেও সাড়াশি অভিযান চলছে। যাতে ডিএইচএস সেক্রেটারি রাতভর আইস এইজেন্টদের সঙ্গে থেকে অংশ নিয়েছেন। ব্রঙ্কসের ওই অভিযানে একজন সন্দেহভাজন অপরাধীকে আটক করা হয়। স্টেইট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহায়তা ছিলো সীমিত।
তারপরও শরণার্থী গণবিতাড়নে নিউ ইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামসের সহায়তায় প্রশংসা করেছেন নবনিযুক্ত হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নৌম। সিবিএস নিউযের সাংবাদিকের কাছে তিনি বলেছেন, ভয়ংকর অপরাধী ধরতে গিয়ে স্থানীয় সহায়তা জরুরি হয়ে পড়েছিলো।
নৌম আশা প্রকাশ করেন, এত বড় অভিযানে স্টেইট কর্তৃপক্ষ পাশে দাঁড়াবে। ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স আশা করছেন, জোরালো অভিযানে শরণার্থী বিতাড়নের সংখ্যা বছরে মিলিয়ন ছাড়াতে পারে। তবে অ্যারিযোনায় আইসের অভিযানের বিরুদ্ধে শত শত মানুষ বিক্ষোভ করেছে।
স্টেইট গভর্নর ক্যাটি হবস জানিয়েছেন, অভিবাসী বিতাড়নে স্কুল কিংবা চার্চে অভিযানে সহায়তা দেবে না তার প্রশাসন। বর্ডার জার টম হোম্যান অবশ্য বলছেন, জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলায় কাজ করছে আইস। নিরীহ পরিবার ধরায় তাদের কোন ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না।
এদিকে ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাল কোহনের সিটি কাউন্সিল চেম্বারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়ে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা প্রকাশ করেছে বাসিন্দারা। তারা এসবি ফিফটি ফোর বা ক্যালিফোর্নিয়া ভ্যালুয অ্যাক্ট সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা চেয়েছেন। যাতে এই অভিযান ঠেকাতে স্টেইট সেনেট বিলটির কার্যকারিতা জানা যায়।
এদিকে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে নিউ ইয়র্কে আইসের অভিযানের সমালোচনা করেছেন স্টেইট অ্যাটর্নি লেটিশিয়া জেইমস। তবে নানা ধরনের অপরাধে যুক্ত শরণার্থীদের আটকের বিষয়টিতে সমর্থন যুগিয়েছেন তিনি।
তবে লেটিশিয়া, নিরীহ সাধারণ অভিবাসন প্রত্যাশীদের নানা হয়রানির কথা তুলে ধরে বলেছেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মানুষ অ্যামেরিকায় আসে অনেক আশা নিয়ে। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের অমানবিক উদ্যোগ তাদের সেই আশা-ভরসা ধ্বংস করে দিচ্ছে।