জেবি টিভি রিপোর্ট :
ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেয়া ‘জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব’ আইন বাতিলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। ১৮ স্টেটের অ্যাটর্নি জেনারেল । প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণ এবং নির্বাহী আদেশ জারি করার ২৪ ঘন্টার মধ্যে মঙ্গলবার আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের করা হয়। অ্যাটর্নি জেনারেলরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশকে আটকে দেওয়ার জন্য মামলা করেছেন।
জানা গেছে, অবৈধ অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী সন্তানদের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করে ট্রাম্প নির্বাহী আদেশ জারি করেন। এই মামলা ম্যাসাচুসেটসের ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে দায়ের করা হয় এবং সান ফ্রান্সিসকো ও ওয়াশিংটন, ডি.সি. শহরও এতে বাদী হিসেবে যোগ দেয়।
ট্রাম্পের ‘জন্মগত নাগরিকত্ব আইন’ প্রত্যাহার করার প্রচেষ্টাকে ‘অদ্ভুত এবং চরমপন্থী’ বলে আখ্যায়িত করেছেন নিউ জার্সির অ্যাটর্নি জেনারেল ম্যাথিউ জে. প্ল্যাটকিন। তিনি ক্যালিফোর্নিয়া এবং ম্যাসাচুসেটসের অ্যাটর্নি জেনারেলদের সাথে এই আইনি প্রচেষ্টার নেতৃত্বে রয়েছেন। প্ল্যাটকিন আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট ক্ষমতাশালী, কিন্তু তিনি রাজা নন। তিনি একটি কলমের খোঁচায় সংবিধান পরিবর্তন করতে পারেন না।
গত সোমবার, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম দিনেই ট্রাম্প একটি আদেশে স্বাক্ষর করেন। ভবিষ্যতে অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানদের যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করা হবে না। এমনকি কিছু বৈধভাবে কিন্তু সাময়িকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকারী মায়েদের সন্তানদেরও নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করবে এ আদেশ। যেমন বিদেশি শিক্ষার্থী বা পর্যটকদের এখানে জন্মগ্রহণ করা সন্তানও নাগরিকত্ব পাবে না।
এদিকে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছে, এই ধরনের অ-নাগরিকদের সন্তানরা যুক্তরাষ্ট্রের ‘আইনি এখতিয়ারের আওতাভুক্ত নয়’, তাই সাংবিধানের ১৪তম সংশোধনীতে বর্ণিত প্রিভিলেজের আওতায় এরা পড়ে না।
এই নির্বাহী আদেশটি ১০০ বছরেরও বেশি কাল ধরে চলে আসা আইনের বিপরীতে যায়। আদালত এবং নির্বাহী শাখা ১৪তম সংশোধনীকে এমনভাবে ব্যাখ্যা করেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া প্রতিটি শিশুকে নাগরিকত্বের নিশ্চয়তা দেয়, তাদের পিতামাতার আইনগত অবস্থান নির্বিশেষে।
তবে দেশটির বর্তমান বিচার বিভাগ এই বিষয়ে বিভক্ত হতে পারে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। মার্কিন পঞ্চম সার্কিট কোর্ট অফ আপিলস-এ ট্রাম্প মনোনীত বিচারপতি জেমস সি. হো নির্বাহী আদেশের পক্ষে ট্রাম্পের দেয়া যুক্তির পক্ষে। তিনি অবৈধ অভিবাসীদের একটি আক্রমণকারী বাহিনীর সাথে তুলনা করেছেন।
ম্যাসাচুসেটসে শুরু হওয়া এ মামলাগুলো আপিল কোর্টে কতোটা প্রশ্রয় পাবে , তা এখনই বলা যাচ্ছে না। সংবিধানের নবতর ব্যাখ্যা নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের যুক্তি আদালত হয়তো বিবেচনা না করে কংগ্রেসের হাতে ছেড়ে দেবে। এ নিয়ে কংগ্রেসে আইন পাশ করাও সহজ হবে বলে মনে হচ্ছে না। ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি ম্যাককিনি স্কুল অফ ল-এর অধ্যাপক জেরার্ড ম্যাগলিওকা বলেন, যদি ছাত্রঋণ বা কোভিড-১৯ বিধি নিয়ে এককভাবে নির্বাহী শাখা সিদ্ধান্ত নিতে না পারে।
তবে নাগরিকত্বের মতো বিষয়েও তা সম্ভব নয়। দ ম্যাগলিওকা আরও বলেন,রাজ্যগুলো সঠিক পথে রয়েছে এবং আদালত সম্ভবত তাদের সঙ্গে একমত হবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এ নির্বাহী আদেশ আমেরিকার অভিবাসনের একটি মৌল বিষয়কে উস্কে দিয়েছে এবং তার এ উদ্যোগ রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যেই শেষ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ হয়ে পড়বে বলে অভিবাসী আইনজীবীরা মনে করছেন।