Friday, February 7, 2025

গভর্ণরের সিডিপ্যাপ ট্রানজিশনে স্থগিতাদেশ আদালতের

Share

জেবি টিভি রিপোর্ট : কনজিউমার ডিরেক্টেড পার্সোনাল অ্যাসিসট্যান্স প্রোগ্রাম (সিডিপ্যাপ) হোমকেয়ার কর্মসূচীতে পরিবর্তন স্থগিত করেছে আদালত।নাসাউ কাউন্টি বিচারক জেরোম সি. মারফির জারি করা এক অস্থায়ী স্ট্রেইনিং আদেশের কারনে হোমকেয়ার সেবায় এখন আর পাবলিক পার্টনারশীপ এলএলসি -(পিপিএল)র আর কর্তৃত্ব থাকছে না।

মূলত হোমকেয়ার সেবায় এই পিপিএলের মতো অনভিজ্ঞ ও বির্তকিত প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করার এমন সিদ্ধান্ত নিউইয়র্ক সিটির লাখো বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সেবা গ্রহীতাদের আদৌও ঝুকিঁতে ফেলছে কিনা এমন প্রশ্নের জেরে এবার গত ২৭ জানুয়ারী দ্বিতীয়বারের মতো এই বিচারক রাজ্যের সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখালেন।সাময়িক এই নিষেধাজ্ঞা মূলত নিউ ইয়র্কের রাজ্য স্বাস্থ্য বিভাগ এবং পাবলিক পার্টনারশিপস LLC-এর বিরুদ্ধে জারি করা হয়েছে । এতে করে স্টেটের ৯ বিলিয়ন ডলার মেডিকেইট প্রোগ্রাম সমন্বয়ে নতুন করে সমস্যা সৃষ্টি করেছে।

এ প্রসঙ্গে আলায়েন্স টু প্রটেক্ট হোম কেয়ারের নির্বাহী পরিচালক ব্রায়ান ও ম্যালি এক বিবৃতিতে জানান, নিউইয়র্ক স্বাস্থ্য বিভাগের নেয়া চুক্তিটি মূলত তাড়াহুড়ো করে নেয়া হযেছিল। এখন যেসব ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা হোমকেয়ার সেবার সাথে জড়িত তাদের কথা না ভেবে অনেকটা জোর করেই পিপিএলে স্থানান্তরে সিদ্ধান্ত ছিল।এতে নিউইয়র্কে বসবাস করছেন এমন লাখো বয়স্ক এবং প্রতিবন্ধী হোমকেয়ারকে ঝুঁকিতে ফেলা হচ্ছে। তিনি বলেন,হোম কেয়ার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ভোক্তাদের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য শেয়ার করতে বলা হচ্ছে । আর এই শেয়ার করতে যে বলা হচ্ছে তা অনেকটা তাড়াহুড়োর মধ্যে, এবং সম্ভবত অবৈধভাবে । এর পরিবর্তে স্বাস্থ্য বিভাগ এবং গভর্নর হোকুল আমাদের সাথে এক সাথে কাজ করতে এগিয়ে আসা যৌক্তিক ছিল । আর এটি এ কারনে করা উচিত যে, এতে করে পুরো নিউইয়র্ক স্টেট আরও একটি পিপিএল বিপর্যয়ে পরিণত না হয়।
জানা গেছে, গত মাসে এই বিচারক রাজ্যের নির্দেশনাকে যে স্থগিত করেছেন, যার মাধ্যমে ফিসক্যাল ইন্টারমিডিয়ারিদের জন্য ‘কনজিউমার-ডাইরেক্টেড পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্স প্রোগ্রাম’ বা সিডিপ্যাপের তথ্য প্রদান করতে বলা হয়েছিল। এবার, সিদ্ধান্তটি শুধুমাত্র একটি মিডলম্যান কোম্পানির ওপর নয়, বরং বেশ কয়েকটি কোম্পানির ওপর প্রভাব ফেলেছে, যারা বর্তমানে প্রোগ্রামের প্রশাসনিক কাজ করছে। এর আগে লিভিংস্টন কাউন্টিতে একটি একক ফিসক্যাল ইন্টারমিডিয়ারির উপর এই আদেশ ছিল, কিন্তু এই মাসের শুরুর দিকে সেটি ওভারটার্ন করা হয়েছিল।

মূলত, ব্যক্তিগত স্বার্থের দিক বিবেচনা করে গত বছর গভর্নর হোকুল পুরো সিডিপ্যাপ প্রোগ্রাম প্রশাসনটি নিউইয়র্কের বাইরের প্রতিষ্ঠান পিপিএল এর হাতে তুলে দেওয়ার জন্য চুক্তি সম্পন্ন করেন। যেখানে পিপিএলের নিউ ইয়র্কে বসবাসরত বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী সময়ে খুব কম অভিজ্ঞতা রয়েছে । পিপিএল এরই মধ্যে অন্যান্য অনেক সেবা দিয়ে ব্যাপক হারে বির্তকের জন্ম দিয়েছে । বিশেষত কর্মীদের বেতন না দেওয়া এবং হাজার হাজার ভোক্তাকে তাদের হোম কেয়ার হারাতে বাধ্য করার মতো ঘটনাও পিপিএলের সুনামকে ক্ষুন্ন করেছে ।

এরপরও গভর্নর এবং পিপিএলের শীর্ষ কর্মকর্তারা দাবি করছেন , জানুয়ারী ৬ থেকে এপ্রিল ১ পর্যন্ত মাত্র ৩ মাসে ২৮০,০০০ ভোক্তা এবং ৪২৫,০০০ পি.এ.-কে এ প্রতিষ্ঠানের সিস্টেমে সফলভাবে স্থানান্তর করতে পারবেন। যা রীতিমতো অসম্ভব।

বর্তমানে ৭ শতাধিকের বেশি ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান রয়েছে নিউইয়র্ক স্টেটে যারা নিরলস ভাবে বিভিন্ন কমিউনিটির লাখো পরিবার হোমকেয়ার সেবা গ্রহীতাদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে । বাংলাদেশি কমিউনিটির অনেকেই নিজের পরিবারের বয়োবৃদ্ধ পিতা-মাতা কিংবা নিজের আত্মীয় স্বজনের সিডিপ্যাপ হোমকেয়ার দিয়ে আসছেন। এছাড়াও বর্তমানে হোম কেয়ার সেবা কোম্পানী ও এজেন্টদের সাথে কাজ করে তারা অনেকেই অভ্যস্ত। কিন্তু সিডিপ্যাপের নতুন কোম্পানির শর্তে হের ফের হলেই হারাতে পারেন হোমকেয়ার।

বিশেষত নতুন এ পরিকল্পনায় নির্দিষ্ট কোম্পানীর অধীনে চলে গেলে এতে জড়িত ক্ষুদ্র ব্যবসায় ধস নামবে। নিউইয়র্কে ছোট-বড় প্রায় ৭ শতাধিক এজেন্সী দীর্ঘদিন সিডিপ্যাপ প্রোগ্রামের আওতায় হোম কেয়ার সেবা পরিচালনার ব্যবসা করে আসছে। এতে প্রায় কয়েক হাজার কর্মী চাকরি করছেন। তাছাড়া সিডিপ্যাপ এর আড়াই লাখ কনজ্যুমারকে একসাথে হস্তান্তর এবং একটি এজেন্সীর দ্বারা সেবা প্রদানে বেশ জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। কমিউনিটির অনেক সেবা গ্রহীতা যারা তারা পুরাতন এজেন্সীর মাধ্যমে সেবা গ্রহণে অভ্যস্ত। এছাড়াও এসব কোম্পানী কিভাবে সেবা দিবে এবং বেতন কাঠামো কি হবে সেটা নিয়ে স্পষ্ট কোন ধারণা পাচ্ছেনা এ খাতে জড়িতরা। অনেকে মনে করছেন ঘণ্টা প্রতি বেতন কমে যেতে পারে। কারণ কোম্পানি যে বেতন নির্দিষ্ট করবে সেই বেতনেই হোমকেয়ার সেবা দিতে হবে।

আরও পড়ুন

আরও সংবাদ