জেবি টিভি রিপোর্ট : ভারতের শাসক দল বিজেপির আয় যেমন সব দলের চেয়ে বেশি, খরচেও তেমন তারা শীর্ষে। নির্বাচন কমিশনের কাছে ২০২৪ সালের খরচের যে হিসাব বিজেপি জমা দিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, কংগ্রেসের তুলনায় গত বছর তারা খরচ করেছে তিন গুণ বেশি টাকা। নির্বাচন কমিশন গতকাল বৃহস্পতিবার এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
২০২৪ সালে ভারতে লোকসভার নির্বাচনের সঙ্গে ওডিশা ও অন্ধ্র প্রদেশ রাজ্যের বিধানসভার ভোট হয়েছিল। তার পর হয়েছে জম্মু কাশ্মীর, হরিয়ানা, ঝাড়খন্ড ও মহারাষ্ট্র বিধানসভার ভোট। এই সব ভোটে বিজেপি খরচ করেছে ১ হাজার ৭৩৭ কোটি ৬৮ লাখ রুপি। তুলনায় কংগ্রেসের খরচ হয়েছে ৫৮৪ কোটি ৬৫ লাখ। নির্বাচন কমিশন সব দলকে ৯০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করতে বলেছিল। বিজেপি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা জমা দিতে পারেনি। পরে জমা দেওয়ার জন্য তারা কমিশনের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছে।
বিজেপি সবচেয়ে বেশি খরচ করেছে বিজ্ঞাপনে। টিভি, খবরের কাগজ, রেডিওর পাশাপাশি সব ধরনের সামাজিক মাধ্যমে তাদের প্রচারের ধারে কাছে কোনো দল পৌঁছতে পারেনি। শুধু এই খাতে তাদের খরচ ৬১১ কোটি ৫০ লাখ রুপি, যা কি না মোট খরচের ৩৫ শতাংশ। এই টাকার মধ্যে প্রায় ১৫৭ কোটি তারা দিয়েছে গুগল ইন্ডিয়াকে, সাড়ে ২৪ কোটি দিয়েছে ফেসবুককে। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম মেনে প্রার্থীদের তারা দিয়েছে ২৪৫ কোটি টাকা। দলের সভাপতি জে পি নাড্ডা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংসহ প্রধান নেতাদের প্রচারে খরচ করেছে প্রায় ১৬৯ কোটি।
সর্বভারতীয় স্তরে বিজেপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস। ২০২৪ সালে তাদের মোট নির্বাচনী খরচ হয়েছিল ৫৮৪ কোটি ৬৫ লাখ। এই টাকার ৭০ শতাংশ তারা খরচ করেছে বিভিন্ন প্রচার ও সামাজিক মাধ্যমে বিজ্ঞাপনে।
বিজেপির প্রভাব, প্রচার ও অর্থবলের কাছে বিরোধীরা কত অসহায় তার আরও একবার প্রমাণ পাওয়া গেল চন্ডীগড় পৌরসভার মেয়র নির্বাচনে। গতকাল ওই নির্বাচনে কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টির (আপ) জোট প্রার্থী প্রেমলতাকে হারিয়ে জেতেন বিজেপির হরপ্রীত কৌর বাবলা।
অথচ সংখ্যায় বেশি ছিলেন কংগ্রেস ও আপের কাউন্সিলর। তাঁদের সম্মিলিত সংখ্যা ছিল ১৯। আপের ১৩, কংগ্রেসের ৬। বিজেপির কাউন্সিলরের সংখ্যা ১৬। চন্ডীগড়ের লোকসভার সংসদ সদস্য কংগ্রেস নেতা মনীশ তিওয়ারি এই নির্বাচনে পদাধিকারবলে ভোটার। তাঁকে নিয়ে বিরোধীদের কাছে ছিল ২০টি ভোট। নির্বাচনের আগে কংগ্রেসের একজন বিজেপি যোগ দেন। এবং ভোটের দিন ক্রস ভোট দেন আরও ২ জন। ফলে বিজেপি প্রার্থী পান ১৯ ভোট, জোট প্রার্থী ১৭। ভোট গোপনে হওয়ায় বোঝা যায়নি ক্রস ভোট দেওয়া দুই কাউন্সিলর কোন দলের।
দিল্লির ভোটের আগে চন্ডীগড়ের মেয়র পদ ছিনিয়ে নেওয়া বিজেপির পালে বাড়তি হাওয়া। দিল্লিতে লড়াই ত্রিমুখী। কংগ্রেস ও বিজেপি দুই দলের আক্রমণের অভিমুখই আম আদমি পার্টি। প্রচারে বিজেপি সবার ওপরে। দিল্লিতে ভোট ৫ ফেব্রুয়ারি। ফল ঘোষণা ৮ তারিখ।
