জেবি টিভি রিপোর্ট : নিউ ইয়র্ক সিটিতে অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ (আইসিই) অভিযান শুরু হয়েছে। গত মঙ্গলবার অভিযান পরিচালনার সময় হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের (ডিএইচএস) সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোম উপস্থিত ছিলেন।
গত শনিবার ডিএইচএস-এর প্রধান হিসেবে নিশ্চিত হওয়ার পর নোম মঙ্গলবার একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন। সেখানে দেখা যায় এজেন্টরা নিউ ইয়র্ক সিটির একটি অজানা স্থানে একজন ব্যক্তিকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
নোম তার পোস্টে লেখেন নিউ ইয়র্ক সিটিতে অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ (আইসিই) অভিযান শুরু হয়েছে। অপহরণ, হামলা এবং চুরির অভিযোগ থাকা এক অপরাধী বিদেশিকে আটক করা হয়েছে। ধন্যবাদ। এ ধরনের অপরাধীদের রাস্তায় আর থাকতে দেওয়া হবে না।
যদিও ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে মঙ্গলবারের উচ্চ-প্রোফাইল অভিবাসন কার্যক্রমে আটক হওয়া মানুষের সংখ্যা নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোন পরিসংখ্যান দেওয়া হয়নি, তবে রিপোর্ট অনুযায়ী, এই অভিযানগুলো অপরাধী, গ্যাং সদস্য এবং “দূষিত ব্যক্তি”দের টার্গেট করার বাইরে গিয়ে আরও অনেককে আটক করেছে, যাদের সম্পর্কে ফেডারেল কর্মকর্তারা বলেছিলেন তারা টার্গেট হবে।
তথ্য বলছে, ঔদিন মানে মঙ্গলবার অভিযানগুলোর মধ্যে প্রায় ২০ জনকে আটক করা হয়েছিল। আটক হওয়া বেশিরভাগ লোকের “অপরাধমূলক রেকর্ড” ছিল, তবে আট জনের আগে কোন অপরাধমূলক ইতিহাস ছিল না। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোএম এই অভিযানে যোগ দেন, এবং মিডিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
ফেডারেল আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, যার মধ্যে রয়েছে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE) এবং ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (DEA), এক্স (X) প্ল্যাটফর্মে স্থানীয় DEA শাখা দ্বারা পোস্ট করা ছবিতে কমপক্ষে চারজন ব্যক্তিকে আটক করতে দেখা যায়।
নিউ ইয়র্ক সিটি ICE ফিল্ড অফিসের মুখপাত্র মেরি ফার্গুসন বুধবার বলেছেন, “অপারেশনাল নিরাপত্তার কারণে এবং আমাদের আইন প্রয়োগকারী কর্মীদের নিরাপত্তার জন্য, ICE চলমান অভিযানের বিষয়ে নিশ্চিত করে না বা আলোচনা করে না।
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে, তার “সীমান্ত সাজার” টম হোম্যান বারবার বলেছিলেন যে অভিবাসন এজেন্টরা অপরাধী এবং গ্যাং সদস্যদের টার্গেট করবে, এবং প্রশাসনের “বড় আকারে নির্বাসন” প্রচেষ্টায় এগুলোকেই প্রধান অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
তবে হোম্যান বলেছিলেন, “কল্যাটেরাল অ্যারেস্ট” বা এমন ব্যক্তিদের আটক করা প্রত্যাশিত, যারা কার্যক্রমের প্রধান লক্ষ্য ছিল না — বিশেষত “শরণার্থী সিটিগুলোতে” যেখানে স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলি ফেডারেল অভিবাসন কর্তৃপক্ষের সাথে সহযোগিতা সীমিত করে। বাইডেন প্রশাসন কল্যাটেরাল অ্যারেস্ট নিষিদ্ধ করেছে।
তবে, ট্রাম্পের দায়িত্ব নেবার পর থেকে নিউ ইয়র্ক সিটি অঞ্চলে বা জাতীয়ভাবে আইসিই থেকে কতজনকে আটক করা হয়েছে, সে সম্পর্কে কোনো অফিসিয়াল তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
গত বছরেরর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এজেন্সির ডেটা পাওয়া যায়, তখন প্রতিদিন প্রায় পাঁচটি গ্রেপ্তার করেছে নিউ ইয়র্ক সিটি এলাকায়। ২০২৩ সালে, ICE প্রতিদিন নিউ ইয়র্ক সিটিতে প্রায় ২৪ জনকে আটক করেছে।
নিউ ইয়র্ক সিটিতে এই সপ্তাহের অভিযানগুলো এক সপ্তাহ আগে শিকাগো অঞ্চলে ICE এর অভিযানগুলোর পর এসেছে, যেখানে কমপক্ষে ১০০ জনকে আটক করা হয়েছে, শিকাগো পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট ল্যারি স্নেলিং এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন।
দেশব্যাপী আইসিই এর কার্যক্রম বাড়ানোর পর, এজেন্সি মঙ্গলবার জানিয়েছে, তারা প্রতিদিন ১,০০০ জন বা তার বেশি লোককে আটক করছে, এক্স প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শেষ হওয়া আর্থিক বছরে, ICE প্রতি দিন প্রায় ৩১১ জনকে আটক করেছে, এজেন্সির বার্ষিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ICE এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেনি যে, সম্প্রতি আটক হওয়া লোকদের মধ্যে কতজনের অপরাধমূলক রেকর্ড ছিল।
এদিকে, জাতীয়ভাবে ICE এর বেশিরভাগ আটকানো লোকের মধ্যে অপরাধমূলক ইতিহাস নেই, বা তারা অ-সহিংস অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত, যেমন অবৈধভাবে সীমান্ত পার করা।
