joybangladesh.tv
Wednesday, May 28, 2025

নিউইয়র্কে অবৈধ অভিবাসী কমলেও , কমছে না ব্যয়

Share

কাবেরী মৈত্রেয় : বিগত কয়েক বছরে অবৈধ অভিবাসীদের আবাসন ও যত্নের জন্য করদাতাদের অর্থ থেকে ৭ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ব্যয় করেছে নিউইয়র্ক সিটি।

সিটিতে বর্তমানে ৫০টি আশ্রয়কেন্দ্র ও হোটেল বন্ধ করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে । যা মার্কিন নাগরিক নন এমন ব্যক্তিদের আশ্রয় দিত। যদিও সিটির তত্ত্বাবধানে থাকা মানুষের সংখ্যা কমছে, তারপরেও অনুসন্ধান করে দেখা গেছে , বৈধ অধিবাসীদের কাছ থেকে নানা খাতে আদায় করা করের একটি উচ্চ অংশ এসব নথিপত্র বিহীনদের জন্য খরচ করা হচ্ছে।

জানা গেছে, প্রথম যখন অবৈধ অভিবাসীদের বোঝাই বাসগুলো সিটিতে প্রবেশ করতে শুরু করে, তখন এত মানুষ ছিল যে তাদের রাখার জন্য কোনো ব্যবস্থা ছিল না। সিটির অভিবাসন বিষয়ক কমিশনার ম্যানুয়েল কাস্ত্রো তাদের স্বাগত জানান এবং সমস্যার সমাধান খুঁজতে উদ্যোগ নেন।

কাস্ত্রো বলেন, আমাদের এ ধরনের পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য যথেষ্ট সম্পদ ছিল না । এটি শুধু একটি অভিবাসন সংকট মোকাবিলার গল্প নয়, বরং স্থানীয় আইন অনুযায়ী আমাদের দায়িত্ব পূরণের গল্পও।

তিনি জানান, নিউইয়র্ক শহর যে কারও জন্য আশ্রয়ের ব্যবস্থা করার আইনি বাধ্যবাধকতার মধ্যে রয়েছে। তাই প্রশাসন দ্রুত তাবু স্থাপন করে এবং ১৫০টিরও বেশি হোটেলকে আশ্রয়কেন্দ্রে রূপান্তর করে। আমরা এই সঙ্কট মোকাবিলায় ৭ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ব্যয় করেছি ।

অভিবাসীদের জন্য বরাদ্দকৃত বার্ষিক বাজেট সিটির স্বাস্থ্য বিভাগ, স্যানিটেশন বিভাগ এবং এমনকি দমকল বিভাগের বাজেটের চেয়েও বড়। বর্তমানে শহরটি ৪৪ হাজার ৫০০-এর বেশি অবৈধ অভিবাসীর যত্ন নিচ্ছে, যা গত বছরের একই সময়ে ৬৫ হাজার থেকে কমেছে।

প্রশ্ন হচ্ছে , খরচ কমলেও ব্যয় কেন কমছে না? এমন প্রশ্ন করেছেন অলাভজনক ওয়াচডগ গ্রুপের প্রতিনিধি আনা চ্যাম্পনি । তিনি বলেন, সংকট শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু ব্যয় এখনও রয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, সিটির শহরের তত্ত্বাবধানে থাকা অভিবাসীর সংখ্যা কমে গেলেও তাদের জন্য ব্যয়ের পরিমাণ কমেনি।

নিউইয়র্ক সিটিতে প্রতিদিন একজন অবৈধ অভিবাসীকে আশ্রয় দিতে গড়ে ৩৭০ ডলার খরচ হচ্ছে । যেখানে একজন গৃহহীন ব্যক্তির জন্য খরচ হয় মাত্র ২০৭ ডলার।

চ্যাম্পনি প্রশ্ন তোলেন, প্রতি দিনের ব্যয় এত বেশি কেন? এটি শুরু থেকেই ৩৭০ ডলার স্তরে রয়েছে, যা কোনোভাবে কমানো যায়নি।

কাস্ত্রো ব্যাখ্যা করেন, এটি মূলত এই কারণে যে আমাদের এক রাতের মধ্যেই একটি সম্পূর্ণ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হয়েছিল এবং এমন লোকদের সহায়তা করতে হয়েছিল, যাদের আসার কোনো পূর্বাভাস ছিল না।”

তিনি আরোও বলেন , এই সংকট পরিচালনার জন্য আমাদের অবকাঠামো ছিল না, তাই দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হয়েছে । একই সাথে অবৈধ অভিবাসীদের আবাসন নিশ্চিতে বেশিরভাগ চুক্তি জরুরি বিধির অধীনে স্বাক্ষরিত হওয়ায় এগুলোতে সাধারণ চুক্তির মতো স্বচ্ছতা বা তদারকি ছিল না বলেও জানান তিনি। এসব চুক্তির মধ্যে রয়েছ, ইয়নকার্সে একটি মোটেলে ১৮ মিলিয়ন ডলার ব্যয়। টাইমস স্কয়ারে একটি হোটেলের জন্য ১৫০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়।

যদিও ওয়াচডগ গ্রুপের চ্যাম্পনি মনে করেন, আমরা এখন আর জরুরি অবস্থার মধ্যে নেই, তাই ব্যয় কমানো দরকার। কাস্ত্রো অবশ্য আশাবাদী যে ভবিষ্যতে এই ব্যয়ের যৌক্তিকতা স্বীকৃত হবে।

তিনি বলেন, যেমন আমেরিকার বহু নাগরিক তাদের ইতিহাস এলিস আইল্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত করতে পারেন, ঠিক তেমনি অনেক অভিবাসী এই সময়টাকে তাদের জীবনের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে দেখবেন।

আরও পড়ুন

আরও সংবাদ