প্রফেসর ড. মো. সদরুল আমিন : প্রফেসর ড. মোহাম্মাদ ইউনুস দেশের সম্মানীয় প্রধান উপদেষ্টা অতি সম্প্রতি ডাবোস বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম বার্ষিক (২০২৫) সম্মেলনে বিভিন্ন বৈঠকে আর্ন্তজাতিক ব্যক্তিগণের সাথে ২-৩ টি বিষয় ফোকাসে এনেছেন। তা হলো: গত সরকার প্রথমত ১. বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনার ব্যাপারে কথা বলেছেন।
প্রসংগক্রমে দেশের উন্নয়ন ও উচ্চ প্রবৃদ্ধি তথ্য ভুয়া জালিয়াতির কথা স্পষ্ট করে বলেছেন। তিনি আরো বলেছেন এই বানোয়াট প্রবৃদ্ধি তথ্য বিষয়ে প্রশ্ন না তোলার জন্য ব্যক্তিত্বকেও উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন যে, দেশের সব মানুষের গড় মাথাপিছু আয় ২৯৫০ ডলার যা ছিল সরকারের সম্পূর্ণ বানানো বুলি। এখন কথা হল-দেশের মাথাপিছু আয়/জনসংখ্যা, জিডিপি ও জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার জালিয়াতি করে অন্য সকল তথ্য ম্যানুফ্যাকচার করাতে সকল তথ্যই দূষিত হয়ে গেছে।
এসব সম্পর্কিত কৃষি অপপ্রচারের মধ্যে রয়েছে ’ বাংলাদেশ খাদ্যে স্বযংসম্পূর্ণ হয়ে গেছে। পানির তলের মাছ, গাছের আম, মাটির তলের আলু, বুড়া-বুড়ির ছাগল বকরী গুণে এবং এমনভাবে অপপ্রচার করা হয়েছে যে আমরা এসব ফসলে প্রথম দ্বিতীয় বা তৃতীয় স্থান অধিকার করে ফেলেছি। দেশের কৃষির জন্য ক্ষতিকর এসব মিথ্যাশ্রয়ী ইচ্ছাকৃত অপপ্রচার তাদের ডকুমেন্ট মিডিয়াতে রয়েছে, যা প্রকৃত বিবিএস তথ্যের সাথে যায় না। কিন্ত বলা বাহুল্য এসব অপপ্রচার জনিত কৃষি ও কৃষকের ক্ষয়ক্ষতি যা হওয়ার তা শুরু হয়ে গেছে। কৃষি ও কৃষকের বাজেট তার ধারাবাহিকতা হারিয়েছে । সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের অনুপযুক্ত মেকানিজমের কারণে সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকার সমন্বিত খামার যন্ত্রায়ন প্রকল্প অংশগ্রহণকারী কয়েকটি কোম্পানির দুর্নীতির কারণে বাকিতে বিক্রি করা কোম্পানীর সুনাম বিনষ্ট হচ্ছে। সার খাত দূর্নীতি , ভর্তুকি ও পেষ্টিসাইড খাত ভেজাল ও মূল্য বৃদ্ধায়নে চ্যাম্পিয়ন হতে চলেছে। এসব অপকর্ম যাদের হতে বর্তমানে ধরা পড়ছে, সমাধানের লক্ষ্যে তারাও কোনো উদ্যোগ না নিয়ে দেশের অন্যতম বৃহৎ মন্ত্রণালয়কে আরো অরক্ষিত করে রাখা হয়েছে। ফলাফল -সারা দেশে অব্যাহতভাবে আমদানি পণ্যের অগ্নিমূল্য এবং কৃষক উৎপাদিত পণ্য মূল্যহীন হয়ে গেছে। বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদন সামান্য কমবেশি নীতিতে ১০-১৫ যাবৎ অনেকটাই স্থির হয়ে আছে।
এর মধ্যে কৃষির কেবল চাউল, গম, ভোজ্য তেল ও চিনি ৪টি মিলে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার। জুলাই-ফেব্রæযারী অর্থ বছর ’২০২২ আমদানি। ১ বিলিয়ন ডলার = প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা। এই হিসাবের বাইরে আমদানির আরও আছে গরম মসলা, ডাল ফসল, দুধ, পেঁয়াজ, মরিচ, রসুন, আদা হলুদ, তুলা, তামাক, কফি, ফল, বীজ, মাছ, মাংস, ডিম, ভুট্টা,++ বছর, রপ্তানি দেশ ও দরভেদে ১-৩ বছরে প্রায় ১০০ বিীলয়ন পর্যন্ত। এখন আমরা অনুমান করতে পারি কৃষির ক্ষেত্রে আমাদেরকে কোথায় নামিয়ে আনা হয়েছে।
খাদ্য দিবস ২০২১ উপলক্ষ্যে একটি সরকারী প্রকাশনা : শত বছরের কৃষি (কৃষি, ফসল, প্রাণি সম্পদ ও মৎস্য। এতে ৬০ বছরের একটি লাইন গ্রাফে ত্রি-বার্ষিক গড় তথ্যধারা উপস্থাপন করা হয়েছে। গ্রাফে উৎপাদন ধারার বার্ষিক ইতিবাচক ুসগনিফিকেন্স কম। কিন্তু এটি বার্ষিক তথ্য করা হলে তা ননসিগনিফিকেন্ট হিসাবে একে বারে ফ্লাট হয়ে যাবে। এই হল বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়নের উন্নয়নকারীর উপস্থাপনার নমুনা । বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা পরিষদের তৈরী এই গ্রাফের ৩টি বিষয় খুবই লক্ষণীয়। ১. কৃষি বিনিয়োগে লাভালাভ দ্বিগুণ হতে সময় লেগেছে প্রায় ২৫-৩০ বছর করে, অথচ ব্যাংক/শিল্প/ব্যবসায় বিনিয়োগে দ্বিগুণ হয় ৫-৮ বছরে। তাহলে বলতে হবে মানুষ কেন কৃষি কাজ করবে ?
এখানে বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদনের কার্যক্রম, উৎপাদন ধারা ও এদের কৃষি জীবিকায় তার প্রভাব তথ্য উল্লেখ করা হল । তাতে যে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেন যে কৃষি ও কৃষক জীবন তা হলে কেমন? আমি বলব ভাল নাই। তার সেবা ও পণ্যের দাম নাই, তার সামাজিক মান আগের চেয়েও কমে যাচ্ছে। এজন্য বছরে বেকার হয়ে ২০-৩০ লক্ষ অন্যের পেশায় হানা দিচ্ছে। নিজে সংসার দুর্যোগ মোকাবিলায় জীবনের ভাইটালিটি হারিয়ে ক্রমে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েও সরকারী কৃষি সহায়ক প্রলোদনা পাচ্ছে না । তাই বলছিলাম জানা থাকলে ভাল হত যে : আর কত ক্ষতিগ্রস্ত হলে কৃষি সরকারী অধিকার ফিরে পাবে।। বিগত সরকার কৃষিতে াবহেলা সহ যেসব কারণে বিগত তা রহিত করে ভার কিছু করে যেতে হলে প্রথমেই কৃষিতে ও কৃষকের পেটে হাত দিতে হবে ।