জেবিটিভি রিপোর্ট: মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাত চলছে প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে। এরই মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। এ পরিস্থিতিতে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি শত্রুদের শনাক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন। ইরান ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি এক বার্তায় খামেনি বলেছেন, ‘কিছু কল্পনাবিলাসী ব্যক্তি দাবি করছেন যে ইরান দুর্বল হয়ে পড়েছে। ভবিষ্যতই বলবে আসলে কে দুর্বল।’
গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, তার পূর্বসূরি জো বাইডেন ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইরানের শক্তি কমে যাওয়ার বিষয়ে মন্তব্য করেছিলেন। বিশেষ করে সিরিয়ায় ইরান-সমর্থিত আসাদ সরকারের চ্যালেঞ্জ, ইসরায়েলের হামলায় বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ক্ষতি এবং ফিলিস্তিনি ও লেবানিজ মিত্রদের নেতাদের হত্যার ফলে তেহরানের আঞ্চলিক প্রভাব কিছুটা কমেছে বলে দাবি করেন তারা।
তবে খামেনি এসব দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘ইরানকে অতীতেও দুর্বল ভাবা হয়েছিল। ১৯৭০-এর দশকে যখন ইরাক ইরানের বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালিয়েছিল, তখনো বলা হয়েছিল ইরান টিকতে পারবে না। কিন্তু ইসলামি শাসন আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। এবারও তার পুনরাবৃত্তি হবে।’
ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় সম্ভাব্য ইসরায়েলি হামলা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। এই হামলাকে সমর্থন করা হবে কি না, এমন প্রশ্নে ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ জানিয়েছেন, ‘এটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের মুহূর্ত এবং আগামী মাসের মধ্যেই আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাদের গুরুত্বপূর্ণ মিত্ররা দুর্বল হয়ে পড়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের কৌশলগত পরিবর্তনে ইসরায়েলি হামলাগুলো বড় ভূমিকা রেখেছে।’
অন্যদিকে খামেনি গাজায় সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতিকে ইরান-নেতৃত্বাধীন প্রতিরোধ ফ্রন্টের বিজয় বলে উল্লেখ করেছেন। তার মতে, ‘প্রতিরোধ বেঁচে আছে এবং টিকে থাকবে, এটি তারই স্পষ্ট লক্ষণ।’
তিনি আরও দাবি করেন, ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হামলা যদি মার্কিন সমর্থন ছাড়া হতো, তাহলে তখনই ইসরায়েলের পতন ঘটত। সেই হামলায় ১,২০০ জন নিহত হয়, যাদের বেশির ভাগই বেসামরিক নাগরিক।
বিশ্লেষকদের মতে, খামেনির বক্তব্য পশ্চিমা বিশ্ব, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি সরাসরি চ্যালেঞ্জ। এটি ইঙ্গিত দেয় যে ইরান আঞ্চলিক শক্তি হিসেবেই রয়ে গেছে এবং বহিরাগত চাপের মুখেও নতি স্বীকার করবে না। একইসঙ্গে তার বক্তব্য পারমাণবিক ইস্যুতে ইরানের ভবিষ্যৎ অবস্থানকেও শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

