জেবি টিভি রিপোর্ট : সরকারি ব্যয় নিয়ে আমেরিকার চলমান জটিলতা কাটছে না। আবারও শাট ডাউনের মুখে পড়তে যাচ্ছিল দেশটি, যদিও শেষ মুহূর্তে তা থেকে রক্ষা পেয়েছে। সময়সীমার ঠিক কিছুক্ষণ আগে হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভে এই বিল পাস হয় এবং তার পর সিনেটেও অনুমোদিত হয়।
এই বিল অনুসারে, সরকার আগামী মার্চ পর্যন্ত ব্যয় অব্যাহত রাখতে পারবে। এর মধ্যে যেমন আছে দুর্যোগের ত্রাণ, তেমনি কৃষিবিষয়ক ব্যয়। কিন্তু এ সময় পর্যন্ত সরকারকে জাতীয় ঋণের ঊর্ধ্বসীমা স্থগিত রাখার ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি ছিল, ‘রিপাবলিকানরা বিষয়টি আমলে নিক।
আমেরিকার অধিবাসীদের জন্য শাট ডাউন এড়ানোর শেষমেষ এমন সিদ্ধান্তকে আমেরিকাবাসীর জন্য কল্যাণকর পদক্ষেপ উল্লেখ করে কংগ্রেসের উভয় পক্ষের সেনেটকে বিশেষ ধন্যবাদ জানিয়েছেন পিপল ইউনাইটেড ফর প্রোগ্রেস ‘পিপল আপ’ প্রেসিডেন্ট স্যার ডক্টর জাফর মাহমুদ ।
তাৎক্ষণিক দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন , আমেরিকান কংগ্রেস বিশ্বের উন্নত ও উন্নয়নশীল মিলিয়ে সব দেশের রাজনৈতিক সরকার ও দলগুলোর জন্য অনুকরনীয় একই সাথে অভিভাবক হিসাবে কাজ করে আসছে বছরের পর বছর।
তিনি আরো বলেন, সারা পৃথিবী জুড়ে মনে করা হয় আমেরিকা অতীতের বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের চেয়ে অধিকতর শক্তিশালী দেশ । বিশ্ব জুড়ে দেশে দেশে যখন সংকট তখন আমেরিকান নেতৃত্ব অধিবাসীদের স্বার্থের বিষয়ে এতাে সজাগ এবং দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে এই শাট ডাউন ঘোষণা বন্ধের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে। । আমেরিকার যে বিশ্ব মোড়ল এটিই তার অন্যতম উদাহরণ।
এদিকে নতুন এই বিলটি পাশ না হলে গত শনিবার থেকে শাটডাউনের মুখে পড়তো মার্কিন সরকার। শাটডাউনে পড়লে কিছু জরুরি সেবা বাদে অন্যান্য সেবা খাতের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যেত। এতে অনেক সরকারিকর্মীর বেতনও পর্যন্ত বন্ধ যাওয়ার শঙ্কা ছিল।
বড়দিন এবং ইংরেজি নববর্ষের ছুটির মুখে লাখ লাখ মার্কিনির দুর্ভোগের কারণ হয়ে উঠতে পারতো ফেডারেল গভর্নমেন্ট শাটডাউন।
এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আহবানের পরও (হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ) প্রতিনিধি পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউন এড়াতে আনা সংশোধিত বিল পাশে ব্যর্থ হয় রিপাবলিকানরা। এমনকি দলটির কিছু প্রতিনিধিও বিলের বিপক্ষে ভোট দেন। বিলটি পাশে সংসদের নিম্নকক্ষ হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসে দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন প্রয়োজন ছিল।
ডক্টর আবু জাফর জানান, তৃতীয় দফা চেষ্টার পর হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ শাটডাউন রোধে অর্থ বিলটি পাশ করার পরও মার্কিন সিনেটরদের অনুমোদনের প্রয়োজন ছিল। একজন সেনেটর আপত্তি তুললেও শেষ পর্যন্ত অনুমোদন মিলেছে।
নিয়ম অনুযায়ী বিলকে আইনে পরিণত করতে হলে কংগ্রেসের হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ ও সিনেট উভয় জায়গা থেকেই অনুমোদন পেতে হয়। পরে সেটিতে প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষর করতে হয়।
মেয়াদ শেষে আগামী ২০শে জানুয়ারি জো বাইডেন হোয়াইট হাউজ ত্যাগ করবেন। বিলটি পাশের পর রাতে হোয়াইট হাউজ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে তারা এই আইনটিকে সমর্থন করেন।
আবু জাফর বলেন, যদিও ডেমোক্রেটদের সিনেটে খুব অল্প সংখ্যাগরিষ্ঠতা। তবুও এই বিলকে আটকে দেয়া বা ধীরগতির জন্য একজন সিনেটরের আপত্তিই যথেষ্ট। মার্কিন ফেডারেল সরকারের শাটডাউন এড়াতে আনা এই বিলটির বিরোধিতা করেছিলেন রিপাবলিকান সিনেটর র্যান্ড পল। তবে এর পেছনে কিছু কারণকে সামনে এনে তিনি তার যুক্তিও তুলে ধরেছেন।
এদিকে , মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হলেও রিপাবলিকান পার্টি ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো পদে বসেননি। আগামী ২০শে জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন। রাষ্ট্রীয় এই অর্থ বিলটির পক্ষে ভোট দিতে ট্রাম্প হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভের রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের আহ্বানও জানিয়েছিলেন।
তবে রিপাবলিকান কিছু কট্টরপন্থী সদস্যরা মি. ট্রাম্পের এই আহ্বানে সাড়া দেয়নি। তারা এই বিলটির পক্ষে সমর্থন দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
বিলটির পক্ষে ১৭৪টি ভোট পড়ে। আর বিপক্ষে ২৩৫টি। বিপক্ষে ভোট দেন ৩৮ জন রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাও মার্কিন আইনপ্রণেতারা অর্থ বিলটি পাশে ব্যর্থ হলে মার্কিন সরকারের কার্যক্রম আংশিক ‘শাটডাউনে’ চলে যেতো।