জেবি টিভি রিপোর্ট : যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) সব কর্মীকে আট মাসের বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিয়ে পদত্যাগ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন বিভাগের কর্মী কমিয়ে আনা এবং নিজের এজেন্ডা বাস্তবায়নের পদক্ষেপের অংশ হিসেবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সিআইএর মুখপাত্র এবং এ প্রস্তাব সম্পর্কে অবগত দুটি সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
তবে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার পর্যন্ত জাতীয় নিরাপত্তা বিভাগের অধিকাংশ কর্মীর ক্ষেত্রে পদত্যাগের প্রস্তাব কার্যকর হয়নি। জাতীয় নিরাপত্তার কাজে তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা বিবেচনা করে এমনটি করা হয়নি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সিআইএর পরিচালক জন র্যাটক্লিফ ব্যক্তিগতভাবে এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। জন র্যাটক্লিফ এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য ছিলেন এবং ট্রাম্পের প্রথম আমলে দেশটির জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালকের (ডিএনআই) দায়িত্ব পালন করেছেন। ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর গত সপ্তাহে সিআইএর পরিচালক হিসেবে তাঁর নিয়োগ নিশ্চিত করেছে দেশটির পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেট।
র্যাটক্লিফের এক সহযোগী বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের সিআইএ পশ্চিম গোলার্ধে বেশি মনোযোগ দিতে চাই। ঐতিহ্যগতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচিত হয়নি, এমন দেশগুলোকে তারা লক্ষ্যবস্তু করতে চায়।
পদত্যাগের প্রস্তাবটি সিআইএর সব কর্মীর কাছে পাঠানো হলে সবাই তা গ্রহণ করতে পারবেন কি না, তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে কিছু নির্দিষ্ট পেশা এবং বিশেষায়িত জ্ঞানের দরকার আছে, এমন কিছু খাতের কর্মীদের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ থাকবে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। ধারণা করা হচ্ছে, কেন্দ্রীয় সরকারের অন্যান্য বিভাগে যেভাবে একচেটিয়া কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে, সিআইএর ক্ষেত্রে তেমনটি হবে না।
অন্য দুটি সূত্র বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মী ব্যবস্থাপনা অফিস (ওপিএম) গত সপ্তাহে জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালকের কার্যালয়ের (ওডিএনআই) কিছু কর্মকর্তার পদত্যাগের বিষয়ে অভ্যন্তরীণ নির্দেশনা জারি করেছিল।
সিআইএর কর্মীদের পদত্যাগের সিদ্ধান্তটি সাম্প্রতিক। গত সপ্তাহেও সংস্থাটির কর্মীরা ওই পদত্যাগ কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত হবেন কি না, সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তখন পর্যন্ত সংস্থাটির কর্মীরা কর্মসূচিভুক্ত হবেন কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছিল বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।
সিআইএর কর্মীদেরও ছাঁটাই কর্মসূচির আওতায় আনার বিষয়ে প্রথম খবর প্রকাশ করেছিল ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
ট্রাম্প ও তাঁর মিত্ররা বিভিন্ন সময়ে দাবি করেছেন, সিআইএর গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ডিপ স্টেটের অংশ। তাঁরা তাকে দুর্বল করতে বদ্ধপরিকর।
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের সর্বত্র কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মী ছাঁটাইয়ে ট্রাম্পের উদ্যোগ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীদের প্রতিনিধিত্বকারী কয়েকটি সংগঠন ট্রাম্পের কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে।
কর্মকর্তারা বলেছেন, ট্রাম্পের কর্মী ছাঁটাইয়ের পদক্ষেপটি প্রশাসনের ভেতরে ‘কর্মশক্তি হ্রাস’ করবে। ওপিএমের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবারের পরপরই কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছ