জেবি টিভি রিপোর্ট : আমেরিকায় চলতি বছর গৃহহীন মানুষের সংখ্যা ১৮.১ শতাংশ বেড়েছে। এমনটাই উঠে এসেছে ফেডারেলের এক প্রতিবেদনে। ২০০৭ সাল থেকে এই বিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশ শুরু করে শুরু হওয়া এই প্রতিবেদনে গৃহহীনতার এটিই সর্বোচ্চ হার।
অনেকেই মনে করে থাকেন শুধু ক্যালিফোর্নিয়ায় আবাসন সংকট প্রকট। তবে শুক্রবার ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ হাউজিং অ্যান্ড আরবান ডেভেলপমেন্ট বা এইচইউডি প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে দেশ জুড়ে আবাসন সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। এ বছর দেশ জুড়ে গৃহহীন মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ১৮.১ শতাংশ। যেখানে ২০২৩ সালে এই বৃদ্ধির হার ছিল ১২ শতাংশ।
বিশ্লেষকরা দেশে গৃহহীন মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির পেছনে দায়ী করছেন সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন সংকটকে। পাশাপাশি দাবানল, বন্যা, হারিকেইনের মতো ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং দেশের বিভিন্ন স্টেইটে অভিবাসন প্রত্যাশীদের অতিরিক্ত চাপের বিষয়টিও তুলে ধরেছেন তারা। আবাসনের পেছনে অতিরিক্ত অর্থ খরচ নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে বাস্তুচ্যুতদের সংখ্যা প্রতি বছর আরও বাড়ার আশংকা করছেন বিশ্লেষকরা।
এইচইউডি’র প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশে বর্তমানে গৃহহীন মানুষের সংখ্যা ৭৭০ হাজার। প্রতিবেদনে দেখা গেছে গৃহহীন পরিবারের সংখ্যা ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে যা উদ্বেগজনক। বিশ্লেষকরা আবসন সংকট সমস্যা সমাধানে সাশ্রয়ী মুল্যের আবাসন বৃদ্ধির উপর জোর দেন।
দেশে বাস্তুচ্যুত মানুষদের সংখ্যা বাড়ছে। তবে এর ব্যতিক্রম দেখা গেছে লস অ্যাঞ্জেলসে। গত বছরের তুলনায় লস অ্যাঞ্জেলসে গৃহহীনতার হার কমেছে পাঁচ শতাংশ। বাস্তুচ্যুত মানুষদের আবাসন নিশ্চিতে লস অ্যাঞ্জেলেসে এগিয়ে এসেছে অলাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলো। এ বিষয়ে কথা বলেছেন হোপ দ্য মিশনের প্রেসিডেন্ট রোয়ান ভ্যান্সলিভ।
তিনি বলেন, ‘লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি ও শহরের জন্য আমরা সঠিক পথটি বেছে নিয়েছি। আমরা গৃহহীন মানুষদের রাস্তা থেকে তুলে এনে তাদের জন্য নিরাপদ ও স্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করছি। আমাদের এই সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে। আমরা এমন একটি শহরে বাস করতে চাই যেখানে কেউ গৃহহীন অবস্থায় রাস্তায় থাকবে না। তাই আমি মনে করি আমদের এই পদক্ষেপ পুরো দেশের জন্য একটি রোল মডেল হিসেবে কাজ করবে।’
অপরদিকে ওরেগন স্টেইটে বস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এইচইউডি প্রতিবেদনে দেখা গেছে ওরেগনের প্রতি ১০ হজারে ৪৮ জন গৃহহীন অবস্থায় আছেন। ওরেগন দেশের তিনটি স্টেইটের মধ্যে একটি যেখানে দুই তৃতীয়াংশেরও বেশি মানুষ আশ্রয়হীন। পারিবারিক গৃহহীনতার ক্ষেত্রেও শীর্ষে অবস্থান করছে ওরেগন। স্টেইটের ১০টি পরিবারের মধ্যে ছয়টি পরিবারেরই গৃহহীনতার অভিজ্ঞতা রয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবছর ওরেগনে গৃহহীন পরিবারের সংখ্যা বেড়েছে ১৬ শতাংশ।
এইচইউডি উল্লেখিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ওরেগনে গৃহহীনদের মধ্যে প্রবীণ ব্যক্তিদের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। ২০০৯ সালের পর থেকে দেশের যে চারটি স্টেইটে গৃহহীন প্রবীণ ব্যক্তিদের সংখ্যা বেড়েছে তাদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ওরেগন।
গ্রামীণ এলাকাগুলোতে আবাসন সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। যার পেছনে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়াবহতা কে দায়ী করা হচ্ছে। শহর কেন্দ্রিক এলাকাগুলোতে আবাসনের উচ্চ মুল্য গৃহহীনতার অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।